বিজ্ঞান
অধ্যায় ৬: পর্যায় সারণী
তাত্ত্বিক অংশ
পর্যায়সারণীর ইতিহাস
পর্যায় সারণীঃ পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রায় 118 টি মৌলিক পদার্থ আবিষ্কৃত হয়েছে। এদের পর্যায় সংখ্যার পর্যায়ক্রম অনুসারে যে সারণীতে স্থান দেওয়া হয়েছে তাই মূলত পর্যায় সারণী।
1789 সালে ল্যাভয়সিয়ে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, ফসফরাস, মার্কারি, জিংক এবং সালফার ইত্যাদি মৌলিক পদার্থসমূহকে ধাতু ও অধাতু এই দুইভাগে ভাগ করেন।
1829 সালে বিজ্ঞানী ডোবেরাইনার লক্ষ্য করেন তিনটি করে মৌলিক পদার্থ একই রকমের ধর্ম প্রদর্শন করে। তিনি প্রথমে পারমাণবিক ভর অনুযায়ী মৌল তিনটিকে সাজান। এরপর লক্ষ্য করেন দ্বিতীয় মৌলের পারমাণবিক ভর, প্রথম ও তৃতীয় মৌলের পারমাণবিক ভরের যোগগফলের অর্ধেক বা তার কাছাকাছি। একে ডোবেরাইনারের ত্রয়ী সূত্র বলে। তিনি ক্লোরিন, ব্রোমিন ও আয়োডিনকে প্রথম ত্রয়ী মৌল হিসেবে চিহ্নিত করেন।
1864 সাল পর্যন্ত আবিষ্কৃত মৌলসমূহের জন্য নিউল্যান্ড অষ্টক সূত্র প্রদান করেন। এই সূত্র অনুযায়ী মৌলগুলোকে যদি পারমাণবিক ভরের ছোট থেকে বড় অনুসারে সাজানো যায় তবে যেকোনো একটি মৌলের ধর্ম তার অষ্টম মৌলের ধর্মের সাথে মিলে যায়।
আধুনিক পর্যায়সারণীর জনক মেন্ডেলিভ। পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কৃত হওয়ার আগে তিনি বলেন, “মৌল সমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলী মৌলের পারমাণবিক ভর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়”। একে মেন্ডেলিভের পর্যায়সূত্র বলা হয়।
১৯১৩ সালে বিজ্ঞানী হেনরি মোসলে পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কার করেন। পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কারের পর মেন্ডেলিভের পর্যায়সূত্রটি সংশোধিত হয়। নতুন পর্যায়সূত্রঃ “মৌল সমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলী মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়”।
ইলেক্ট্রন বিন্যাস থেকে পর্যায়সারণীতে অবস্থান
কোনো মৌলের ইলেক্ট্রন বিন্যাস থেকে সেই মৌল পর্যায়সারণীর কোন পর্যায় ও গ্রুপে অবস্থান করবে তা খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়।
পর্যায় নির্ণয়ঃ কোনো মৌলের ইলেক্ট্রন বিন্যাস করার পর সবচেয়ে বড় যে প্রধান শক্তিস্তর পাওয়া যায় তাই হবে ঐ মৌলের পর্যায় সংখ্যা।
গ্রুপ নির্ণয়ঃ ইলেক্ট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ উপশক্তিস্তরের উপর নির্ভর করে গ্রুপ তিনভাবে নির্ণয় করা হয়।
ক) যদি কোনো মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরে s উপশক্তিস্তর থাকে তবে s এ বিদ্যমান ইলেক্ট্রন সংখ্যাই হবে ঐ মৌলের গ্রুপ সংখ্যা।
খ) যদি কোনো মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরে s ও p উপশক্তিস্তর থাকে তবে s ও p এ বিদ্যমান ইলেক্ট্রন সংখ্যার সমষ্টির সাথে 10 যোগ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে তাই ঐ মৌলের গ্রুপ সংখ্যা।
গ) যদি কোনো মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরে s ও তার আগের শক্তিস্তরে d উপশক্তিস্তর থাকে। তবে s ও d উপশক্তিস্তরের ইলেক্ট্রন সংখ্যার সমষ্টিই হবে ঐ মৌলের গ্রুপসংখ্যা।
Full PDF Download